সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫ , ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
চার দপ্তরে যেতে ভোগান্তির শেষ নেই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে সরকারকে আর সহযোগিতা নয় মধ্যনগরে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার শায়েখ ফজলুল করীম (রহ.)-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত শান্তিগঞ্জে কৃষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন ছাতকে ডাকাত গ্রেফতার সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে বিএনপি’র শহীদ জিয়া ছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা : ড. এনামুল হক চৌধুরী জামালগঞ্জে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত শিক্ষা ব্যবস্থা দ্রুত জাতীয়করণের দাবি নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করলে মানুষ রাজপথে নামবে : কয়ছর এম আহমদ কৃষকের জমি কেটে সড়ক নির্মাণ ফায়দা লুটছেন আওয়ামী লীগ নেতা ৫ বছরেও শেষ হয়নি ১১ মডেল মসজিদ নির্মাণ সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশ ২০২৫ নিয়ে সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ জল জমি ধান মাছের ব্যাপক ক্ষতি হুমকিতে প্রকৃতি-পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ভোটের দিনক্ষণ আদায়ের ছক কষছে বিএনপি পাসপোর্ট, ভূমি, পাউবো, বিআরটিএসহ ২৫ প্রতিষ্ঠানের ৫৫ দুর্নীতির অভিযোগ যারা ঘুষ খায়, তারা অমানুষ : দুদক কমিশনার হাফিজ আহসান ফরিদ পথে যেতে যেতে: পথচারী শাল্লার পিআইও নুরুন নবীকে বরখাস্তের সুপারিশ

কীটনাশকে সর্বনাশ

  • আপলোড সময় : ২৩-০৫-২০২৫ ০৮:১৭:৩৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-০৫-২০২৫ ০৮:১৭:৩৬ পূর্বাহ্ন
কীটনাশকে সর্বনাশ
কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি চাহিদা এবং গ্রামীণ জীবনের স্থিতিশীলতা এই খাতের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অধিক ফলনের আশায় যে হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার বেড়েছে, তাতে কৃষির ভবিষ্যৎ এখন হুমকির মুখে। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলে এই প্রবণতা মারাত্মকভাবে প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য ও জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। হাওরাঞ্চলের কৃষিজমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহারে হাওরের জলজ জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হয়ে পড়েছে। মৎস্যসম্পদ মারাত্মকভাবে কমে গেছে। শামুক, ঝিনুক, ব্যাঙ, কাঁকড়াসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, পরাগ সংগ্রহকারী মৌমাছি এবং অন্যান্য উপকারী পোকামাকড়ও এই রাসায়নিকের প্রভাবে ধ্বংস হচ্ছে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে ফসলের উৎপাদন ও কৃষির স্থায়িত্বের ওপর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, জমিতে ব্যবহৃত অধিকাংশ কীটনাশক বৃষ্টির পানির মাধ্যমে সরাসরি নদী-নালায় পৌঁছায় এবং আমাদের পানির উৎসকে বিষাক্ত করে তোলে। সেই সঙ্গে এগুলো মাটির উর্বরতা নষ্ট করে, উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং খাদ্য চক্রে প্রবেশ করে মানুষের স্বাস্থ্যেও ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। ক্যান্সার, ¯œায়ু বিকলতা, শিশুদের জন্মগত ত্রুটি - এসবই অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশকের ভয়াবহ পরিণতি। এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ অবশ্যই রয়েছে। বিকল্প হিসেবে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই চাষাবাদ পদ্ধতি- যেমন: জৈব কৃষি, ইন্টিগ্রেটেড পেস্ট ম্যানেজমেন্ট, বায়োকন্ট্রোল, কম্পোস্ট সার ও প্রাকৃতিক কীটনাশকের ব্যবহার আরও উৎসাহিত করতে হবে। কৃষকদের হাতে এসব পদ্ধতির বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ পৌঁছে দিতে হবে, যাতে তারা বিকল্প পদ্ধতিতে লাভজনক চাষাবাদ করতে পারেন। এখানে সরকারের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শক্তিশালী নীতিমালা প্রণয়ন, কীটনাশকের আমদানি ও বিক্রয়ে নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতিকর পণ্যের তালিকা তৈরি ও নিষিদ্ধকরণ এবং মাঠপর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের সক্রিয়তা এই সমস্যা মোকাবিলায় সহায়ক হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। সবশেষে বলতেই হয়, এখনই যদি আমরা সচেতন না হই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা একটি বিষাক্ত, বিপন্ন পরিবেশের দিকে ঠেলে দেব। হাওরাঞ্চলসহ বাংলার প্রতিটি প্রান্তে পরিবেশবান্ধব কৃষি নিশ্চিত করতে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। একসাথে সরকার, কৃষক, গবেষক ও জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাতেই রক্ষা পাবে আমাদের কৃষি, আমাদের জীবন, আমাদের ভবিষ্যৎ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ